আগাম আলু আবাদ করে বেকায়দায় পড়েছেন রংপুরের চাষিরা। খেতে আলু বিক্রি হচ্ছে ১৪ থেকে ১৬ টাকায়। এতে কেজি প্রতি কৃষকের লোকসান হচ্ছে ১০ থেকে ১২ টাকা। এমন লোকসানে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন চাষিরা। ধারদেনা করে চাষাবাদ করা প্রান্তিক চাষিরা বলছেন, এই লোকসান অব্যাহত থাকলে আগামী দুই বছর এই ঘানি টানতে হবে। সংসার চালানো ও কঠিন হয়ে যাবে।
‘আলু আবাদ করি এবার হামার কোমর পড়ি গেইল বাহে। ৫২ টাকা কেজি দরে বীজ কিনি আলু গাড়নো (রোপণ), সেই আলু বেচা নাগোচে ১৫ টাকা কেজি দরে। এই লোকসান পূরণ হবার নয়। মরণ ছাড়া হামার কৃষকের কোনো পথ নাই।’
রংপুরের তিস্তার চরে আগাম রোপণ করা আলু ১৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে বলে এমন অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন গান্নারপার এলাকার কৃষক অহেদুল ইসলাম। শুধু তিনিই নন, আগাম আলুর বাজারে ধস নামায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এ অঞ্চলের কৃষকরা।
এদিকে খেতে আলুর দাম কম হলেও বাজারে আলু বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা কেজি দরে। এতে লাভবান হচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীরা। কৃষকরা বলছেন, সরকার যদি কৃষকের প্রতি নজর না দেয় তাহলে কৃষককে পথে বসতে হবে।
আলু চাষের কেন্দ্র রংপুরেই গেল বছর আলু কিনে খেতে হয়েছে ৮০ টাকা কেজি দরে। এ বছর রোপণ মৌসুমে বেশি দামে বীজ কিনে একবুক আশা নিয়ে কৃষকরা আলু চাষ করেন। কিন্তু আগাম নতুন আলুর বাজারে হঠাৎ ধস নামায় বড় লোকসান গুণতে হচ্ছে তাদের।
কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বীজ, সার ও কীটনাশকের দাম বেড়ে যাওয়ায় আলু চাষে খরচ অনেক বেড়েছে। ভরা মৌসুমে আলুর দাম কমে যাওয়ার ভয় তো আছেই। তার সাথে যুক্ত হয়েছে চলতি শৈত্যপ্রবাহের কারণে ক্ষতির শঙ্কাও। এ কারণে আগাম রোপণ করা আলু বিক্রি না করে উপায় নেই। কিন্তু হঠাৎ দাম কমে যাওয়ায় উৎপাদন খরচ তো উঠছেই না, বরং বিঘাপ্রতি প্রায় ২২ হাজার টাকা লোকসান গুণতে হচ্ছে।