1. news@www.voiceofnews.net : উৎসবের আলো : উৎসবের আলো
  2. info@www.voiceofnews.net : দৈনিক উৎসবের আলো : দৈনিক উৎসবের আলো দৈনিক উৎসবের আলো
  3. info@www.voiceofnews.net : voiceofnews.net :
মঙ্গলবার, ২০ মে ২০২৫, ০২:৩১ অপরাহ্ন

খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তার চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় আধুনিক কৃষি

ভয়েস অব নিউজ ডেস্ক
  • প্রকাশিত: সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৭৪ বার পড়া হয়েছে
কৃষিব্যবস্থার মধ্য দিয়ে মানবসমাজ আলোকিত হয়েছে। গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নয়ন, খাদ্য নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান, দারিদ্র্য বিমোচন তথা স্বনির্ভরতা অর্জনে আবহমানকাল ধরে কৃষি খাত গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। কৃষিভিত্তিক বাংলাদেশের মানুষের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের পুরোটা জুড়েই ছিল কৃষি। স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে শিল্প ও বাণিজ্য-সেবা খাতের উল্লেখযোগ্য বিকাশ ঘটলেও দীর্ঘকাল পর্যন্ত এগুলোও ছিল কৃষির ওপর নির্ভরশীল।

প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে কৃষি উৎপাদনব্যবস্থায় সফল অভিযোজনের ফলে বর্তমানে খাদ্য উৎপাাদন অব্যাহত রেখে বিশ্বে বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে জাতীয় কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো লাগসই প্রযুক্তিসহ প্রায় দেড় শ বিভিন্ন ফসলের জাত উদ্ভাবন করেছে, যা সার্বিক কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিসহ দেশের খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা পূরণ করছে।
এ ছাড়া বন্যা, খরা, লবণাক্ততাসহিষ্ণু ফসলের জাত উদ্ভাবনসহ জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় ভাসমান চাষ, বৈচিত্র্যময় ফসল উৎপাদন, ট্রান্সজেনিক জাত উদ্ভাবন, পাটের জিনোম সিকোয়েন্স উন্মোচন ও মেধাস্বত্ব অর্জনে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ।
জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে প্রতিনিয়ত কমে যাওয়া জমি থেকে স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশে ধানের উৎপাদন বেড়েছে তিন গুণেরও বেশি, গম দ্বিগুণ, সবজি পাঁচ গুণ এবং ভুট্টার উৎপাাদন বেড়েছে দশ গুণ।
প্রধান খাদ্যশস্যের উৎপাদন বাড়ার ফলে জীবিকানির্ভর কৃষি থেকে বাংলাদেশের কৃষি আজ বাণিজ্যিক কৃষিতে রূপান্তরিত হয়েছে। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো কৃষি উৎপাদন বাড়িয়ে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করায় বাংলাদেশের সাফল্যকে বিশ্বের জন্য উদাহরণ হিসেবে প্রচার করছে।
মোট দেশজ উৎপাাদন হিসেবে জিডিপিতে এখন কৃষি খাতের অবদান ১১.৫০ শতাংশ এবং কর্মসংস্থানে ৪০.৬ শতাংশ। খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কৃষিনীতিতে নতুন করে ন্যানো প্রযুক্তির মতো আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
দেশের কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বিজ্ঞানীদের ধারাবাহিক এবং নিরন্তর গবেষণার ফলে ধানসহ বিভিন্ন ফল ও শাক-সবজির জাত উদ্ভাবিত হয়েছে।
ফলে সারা বছর শাক-সবজি ও ফলফলাদির চাষ হচ্ছে, যা দেশের সার্বিক পুষ্টি চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলো ভাতের মাধ্যমে পুষ্টি সরবরাহের লক্ষ্যে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান (জিংক, আয়রন, প্রোটিন, মিনারেলসহ শরীরের অত্যাবশকীয় খাদ্যোপাদানগুলো) দেহের প্রয়োজন অনুসারে চালে সংযোজন, সরবরাহ বা পরিমাণ বৃদ্ধি এবং বিশ্বের সর্বাধুনিক বায়োফর্টিফিকেশন ও জিএম প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। জিংক সমৃদ্ধ ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে, বিটা ক্যারোটিন সমৃদ্ধ গোল্ডেন রাইসের গবেষণা চলমান রয়েছে। এ ছাড়া উচ্চফলনশীল ও পুষ্টিসমৃদ্ধ শাক-সবজি, ফলমূল, গম, সবজি মেস্তা, তেলবীজ ফসল এবং ডালজাতীয় ফসলের বিভিন্ন জাত ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশের মানুষের পুষ্টির চাহিদা আজ বহুলাংশে মেটানো সম্ভব হয়েছে।
কৃষি খাতে বায়োটেকনোলজির ব্যবহার, সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনা, সুষম সার ব্যবস্থাপনা, কৃষি যান্ত্রিকীকরণ, বায়োফর্টিফিকেশনের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান সমৃদ্ধ শস্য উৎপাদনে কাজ করছে কৃষি মন্ত্রণালয়। দেশের রপ্তানি খাতকে সমৃদ্ধকরণে দেশব্যাপী ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলে কৃষি প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্প গড়ে তোলা হচ্ছে। যার ফলে কৃষিপণ্য বা খাদ্যপণ্য আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করাসহ ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
সরকারের ডিজিটাল কর্মসূচির আওতায় ইন্টিগ্রেটেড ডিজিটাল সার্ভিস ট্যাবে ক্লিক করলেই মিলবে কৃষি মন্ত্রণালয় ও অধীনস্থ ১৭টি দপ্তর/সংস্থার ৪৫টি নাগরিক সেবা। ‘ই-কৃষি’ প্রবর্তনের মাধ্যমে ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রযাত্রা জোরদার করা হয়েছে। দেশে মোট ৪৯৯টি কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ কেন্দ্র (এআইসিসি), কৃষি কল সেন্টার (১৬১২৩), এআইএসটিউব, কৃষি তথ্য বাতায়ন, কৃষক বন্ধু ফোন (৩৩৩১), ই-বুক, অনলাইন সার সুপারিশ, ই-সেচ সেবা, কৃষকের জানালা, কৃষকের ডিজিটাল ঠিকানা, ডিজিটাল কৃষি ক্যালেন্ডার, বীজতলা বিক্রয়ে ই-সেবা, কমিউনিটি রেডিওসহ বিভিন্ন মোবাইল এবং ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কৃষিবিষয়ক তথ্যাদি দ্রুত আদান-প্রদান এবং সবার জন্য কৃষি তথ্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ফসল উপযোগিতা নিরূপণ ও ক্রপ জোনিংয়ের জন্য জিআইএস (জিওগ্রাফিক ইনফরমেশন সিস্টেম) প্রযুক্তিনির্ভর অনলাইন ক্রপ জোনিং ইনফরমেশন সিস্টেম সফটওয়্যার প্রস্তুত করা হয়েছে। তরুণ কৃষক ও উদ্যোক্তাদের তারুণ্যের অমিত শক্তির সঙ্গে তথ্য-প্রযুক্তির এসব অপার সম্ভাবনায় আধুনিক কৃষি হবে আরো সমৃদ্ধশালী।

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট