গত ২৪ ঘণ্টায় তাইওয়ানের আশেপাশে ৪৫টি যুদ্ধবিমান এবং ১৫টি জাহাজ পাঠিয়েছে চীন। তাইওয়ানের জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় (এমএনডি) এখবর জানিয়েছে। তাইওয়ানের পানি এবং আকাশসীমার কাছে নতুন করে যুদ্ধ মহড়া শুরু করেছে চীনের পিপল্স লিবারেশন আর্মি (পিএলএ)। এমএনডি কর্তৃক প্রকাশিত একটি ফ্লাইট ম্যাপে দেখা গেছে, ৪৫টি বিমানের মধ্যে ১৪টি তাইওয়ান প্রণালীর মধ্যরেখা অতিক্রম করেছে, অন্য ২০টি তাইওয়ানের বিমান প্রতিরক্ষা শনাক্তকরণ অঞ্চলের (এডিআইজেড) দক্ষিণ-পশ্চিম এবং কেন্দ্রীয় অংশে প্রবেশ করেছে। তাইওয়ান প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, দক্ষিণ উপকূলের কাওশিউং ও পিংতুং থেকে ৪০ নটিক্যাল মাইল দূরে বিমানবাহী রণতরি, ডেস্ট্রয়ার-সহ এক ডজন যুদ্ধজাহাজ এবং অন্তত ৪৫টি যুদ্ধবিমান নিয়ে যুদ্ধের মহড়া শুরু করেছে চীন।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘‘বেজিংয়ের এই একতরফা পদক্ষেপে বাণিজ্যিক উড়ান ও জাহাজ চলাচলে সমস্যা দেখা দিয়েছে।’’ জবাবে ওই এলাকার আশপাশে নৌ, বিমান ও সেনাবাহিনী পাঠিয়েছে তাইওয়ান। পরিস্থিতি ‘পর্যবেক্ষণ ও সতর্কতা এবং যথাযথ পদক্ষেপ নিতে’ এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে। কয়েক বছর ধরে তাইওয়ানের চারপাশে মহড়া এবং যুদ্ধবিমান ও যুদ্ধজাহাজ মোতায়েন বাড়িয়েছে চীন। সার্বভৌমত্বের দাবি ছেড়ে দিতে তাইওয়ানের ওপর চাপ তৈরি করতে এসব পদক্ষেপ নিচ্ছে তারা।
চীন মনে করে তাইওয়ান তাদেরই দেশের ‘বিদ্রোহী ভূখণ্ড’। প্রয়োজনে বলপ্রয়োগ করেও তারা তাইওয়ানকে চীনের মূল ভূখণ্ডে যোগ করতে বদ্ধপরিকর। তবে বেইজিংয়ের এমন দাবির কাছে নতি স্বীকার করতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছে তাইপে। ডনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরে ফেব্রুয়ারির গোড়ায় আমেরিকার সপ্তম নৌবহরের অন্তর্ভুক্ত দু’টি যুদ্ধজাহাজ তাইওয়ান প্রণালীতে ঢুকেছিল। তার পর থেকেই নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে ওই এলাকায়। তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, চীনের পদক্ষেপ তাদের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নীতির সম্পূর্ণ বিরোধী। নিজেদের ‘বাহিনী শক্তিশালী করা ও প্রস্তুতির চেষ্টা অব্যাহত’ রাখার ঘোষণা দিয়েছে স্বশাসিত দ্বীপটি। তাইওয়ানের বিবৃতি নিয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিন জিয়ান সাংবাদিকদের বলেছেন, এটা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিষয় নয়।